ফ্রিল্যান্সিং কি এবং এর অবস্থান?
নিজের স্কিলকে মুক্তপেশার ভিত্তিতে বিক্রি করা যা সাধারনত ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে’ই বলে থাকি। দিনে দিনে এর পপুলারিটি বাড়ছে বেশ কিছু কারনে। প্রথমত বেশীরভাগ উন্নত দেশে ইনহাউজ কাজে যে খরচ যায় তার থেকে অনেক কম খরচে তারা তাদের কাজগুলো আউটসোর্স করতে পারে। এতে করে ওভারওল খরচ কমে যায় এবং প্রফিট মার্জিন বেড়ে যায়। সেজন্যে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান’ও এখন তাদের অনেক কাজ আউটসোর্স করে থাকে। আর এ সুযোগটা কাজে লাগিয়েই আমরা অনেকে ফুল টাইম অফিস জব ছেড়ে দিয়ে মুক্ত পেশায় নিজেদেরকে নিয়ে এসেছি।
অনেকে আবার অন্য কোম্পানির হয়ে ঠিক অফিস জব এর মতই ১৪০-১৬০ ঘন্টা মাসিক ভিত্তিতে কাজ করে, যা রিমোট জব হিসেবে বেশী পরিচিত। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যাদের রেগুলার কাজের জন্য লোক দরকার তারাই সাধারনত রিমোট জব রিমোট এমপ্লয়মেন্ট এর সুযোগগুলো বেশী দিয়ে থাকে। এতে কর নিজের লোকেশনে অফিস করে, সেখানে একজন এমপ্লয়িকে যে পরিমান বেতন দিতে হতো সে বেতনে তারা ২-৩ জনকে রিমোটলি নিয়োগ দিতে পারছে। দিনে দিনে এটা বেশ পপুলার হচ্ছে। এবং যারা রিমোটলি জব করছে তারাও ব্যাপারটাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছে, যার কারনে বাসায় বসে কাজ করলেও সবার মদ্ধে প্রফেশনালিজমটা তৈরি হয়ে গেছে। আর এ কারনেই বড় প্রতিষ্ঠানগুলোও রিমোট জবে আরও কর্মী নিতে উতসাহিত হচ্ছে। তো বলা যায়, এই রিমোট জব ধীরে ধীরে তার জায়গা পাকা-পোক্ত করে নিচ্ছে। আর একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বেশীরভাগ’ই এ ধরনের রিমোট জব করতে চায়। বারবার কাজ খোঁজা বা বিড করার হ্যসেল থাকে না এতে করে।
এখন আসি ছোট ছোট জবগুলোর ক্ষেত্রে, অনেকেই তার পার্সোনাল প্রজেক্ট (টুকটাক গ্রাফিক্স এর কাজ, ওয়েব এর কাজ, ভয়েস আর্টিস্ট, ভিডিও এডিটিং, আরটিকেল রাইটিং, অনলাইন সাপোর্ট, ভার্চুয়াল এসিস্টেন্ট ইত্যাদি.) এর জন্য নিজ এড়িয়ার লোকাল ফার্ম থেকে অনলাইনে বিভিন্ন সোর্স (UpWork, Fiverr) থেকে কাজ করানো শুরু করেছে। কেনান লোকাল ফার্ম এ যেখানে হয়তো একটা কমপ্লিট ওয়েবসাইত ৩০০০-৫০০০ ডলার খরচ হবে সেটা হয়তো সে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর হেল্প নিয়ে ১৫০০-২৫০০ এর মদ্ধে করে ফেলতে পারছে। এবং হাতের নাগালেই সব ধরনের স্কিলসেট এর মানুষ পাচ্ছে। অনলাইনে ঘরে বসেই। লোকাল ফার্মে সেটার জন্য ভিজিট করা, বারবার ফলো-আপ করার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাচ্ছে। সব মিলিয়ে অনেক কাজ’ই এখন অনলাইন বেজড হয়ে গেছে। আমেরিকার মত উন্নত দেশে গেলে এখন ওদের শপিং কমপ্লেক্সে মানুষ পাওয়া যায়না, সবাইল অনলাইনে Amazon এর মত সাইট থেকে কেনাকাটা করে। ঠিক তেমনি লোকাল ফার্মগুলোর উপর নির্ভরতা কমিয়ে সবাই এখন অনলাইনে ঝুকছে।
তো এসব ব্যাপার মিলিয়েই বলা যায় অনলাইন কাজের প্লাটফর্মগুলো ধীরে ধীরে শক্ত একটি অবস্থান তৈরি করছে। এবং দিনে দিনে এর উপর নির্ভরতা আরও বাড়ছে।
তবে এখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, এই মার্কেটপ্লেস কি সবার জন্য?
উত্তরঃ না, সবার জন্য না। কারন খুব’ই কম্পিটিটিভ একটি জায়গা এই অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এখানে টিকে থাকতে হলে আপনাকে হতে হবে স্কিলফুল এবং পাশাপাশি প্রফেশনাল। কারন এখানে আপনার নিজেকেই সব করতে হবে যা একটি কোম্পানি বিভিন্ন লোক দিয়ে করিয়ে থাকে। নিজের মার্কেটিং নিজেকেই করতে হবে, ক্লায়েন্ট এর সাথে কমিউনিকেশন সেটাও আপনাকেই করতে হবে, তারপর কাজ ডেলিভার করা সেটাও আপনাকেই করতে হবে। পেমেন্ট প্রসেস করা সব নিজেকেই করতে হয়। মানে মাল্টি-টাস্কার না হলে এখানে টিকে থাকা দায়। শুধু কাজ পারবো কিন্তু ইংরেজিতে কথা বলতে পারবোনা, তাহলে সেখানে আপনি টিকে থাকতে পারবেন না। কাজ জানেন, ইংরেজি জানেন কিন্তু প্রোফেশনাল নন, তাহলেও টিকে থাকতে পারবেন না। কয়েকটা বাজে রেটিং পেলেই আপনি হারিয়ে যাবেন মার্কেট থেকে। এ ফিল্ডে টিকে থাকতে হলে নিজেকে প্রস্তুত করেই মাঠে নামতে হবে।
সুন্দর ও উপকারী কথাগুলো। ধন্যবাদ ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকেও। সাথেই থাকুন।